ছলেমা খাতুনের ৯১ বছর বয়সেও জোটেনি বয়স্কভাতা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বয়স ৯১বছর। নাম ছলেমা খাতুন। তিনি যেনো কালের সাক্ষী। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুসারে তার জন্ম তারিখ ১ আগস্ট ১৯২৭। কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বমুবিলছড়ি ইউনিয়নের পশ্চিম পাড়া গ্রামে। স্বামীর নাম মৃত নুর হোসেন। তবে এত বয়স হলেও ছলেমা খাতুনের নাম এখনো বয়স্ক ভাতার তালিকায় ওঠেনি! সমাজসেবা অফিসের তথ্য অনুযায়ী, বয়স্ক ভাতা পেতে নারীর জন্য বয়স ৬২ ও পুরুষের জন্য ৬৫ বছর হওয়া প্রয়োজন। সে হিসেবে ছলেমা খাতুনের ২৯ বছর আগে বয়স্কভাতা পাওয়ার কথা। অবশ্য বাংলাদেশে ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে প্রথম ‘বয়স্ক ভাতা’ কর্মসূচি প্রবর্তন করা হয়। শুরুর দিকে মাসিক ভাতার পরিমাণ ১০০ টাকা হলেও বর্তমানে তা ৫০০ টাকা।

বমুবিলছড়ির পশ্চিমপাড়ায় কথা হয় ছলেমা খাতুন ও তার ছেলে শাহ আলমের সাথে। জরাজীর্ণ একটি কুঁড়ে ঘরের এককোণে বিছানা করে মাটিতে পড়ে আছেন ছলেমা। গায়ে ময়লা কাপড়। বয়সের ভারে তেমন ভাল করে কথা বলতে পারেন না। পৈত্রিক ও স্বামীর সূত্রে পাওয়া সব সম্পত্তি ছেলে-মেয়েদের ভাগ করে দিয়েছেন। এমনকি মসজিদের জন্যও তিনি জায়গা দান করে দিয়েছেন।

বয়স্ক ভাতা পান কি না জানতে চাইলে আছিয়া খাতুন বলেন, ‘ছেলের টানাপোড়েনের সংসারে খেয়ে না খেয়ে আছি। ছেলে দিনমজুরী করে। তার সামান্য আয়ে সবাইকে নিয়ে কোন রকম বেঁচে আছি। সবাই বয়স্কভাতা পায়। আমি পাইনা। তিনি প্রশ্ন করেন, আমার বয়স্কভাতা পাওয়ার সময় কি এখনও হয়নি?’

তবে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর মেয়ে এখন দেশের প্রধানমন্ত্রী। তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে বয়স্কদের জন্য ভাতা বৃদ্ধি করেছেন।’ তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির অবহেলাকে তিনি দোষ দেন। তারা চেষ্টা করলে তাকে বয়স্ক ভাতা দিতে পারতেন বলে মনে করেন তিনি।

ছলেমা খাতুনের ছেলে শাহ আলম বলেন, ‘আমার মায়ের চেয়ে বয়সের ছোট অনেকে বয়স্কভাতা পায়। আমার মা পায়না। আমরা গরীব মানুষ। ভাতা পেলে মাকে চিকিৎসা করাতে পারতাম। এ পর্যন্ত কোনো জনপ্রতিনিধি তার মাকে বয়স্ক ভাতা দেননি। তারা আমার মাকে বয়স্কভাতা দেয়নি। গরীবের দিকে নজর দিতে সরকারের কাছে আবেদন করছি।’

বমুবিলছড়ির ইউপি সদস্য আহাম্মদ হোসেন বলেন, ‘সামনে নতুনভাবে বয়স্ক ভাতা আসলে, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাকেই প্রথমে কার্ড করে দেব।’

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান বলেন, ‘বয়স্ক মহিলাটিকে তার ছেলে দিয়ে আমার কাছে পাঠিয়ে দেন। তার বয়স্কভাতা প্রদানের সকল দায়িত্ব আমার।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর